Showing posts with label Pigeon. Show all posts
Showing posts with label Pigeon. Show all posts

Tuesday, December 16, 2014

বসতবাড়িতে অল্প শ্রমে ও স্বল্প ব্যয়ে কবুতর পালন




শখ যখন দিবে টাকা; ঘুরবে এবার আরো জোরে তোমার জীবন চাকা



আমাদের দেশে হাঁস-মুরগির মতো অনেক বাড়িতেই কবুতর পালন করা হয়ে থাকে। এখনও পুরনো পদ্ধতিতে কবুতর পালন করা হচ্ছে। তবে ইদানীং জনসাধারণের মাঝে উন্নত পদ্ধতিতে কবুতর পালনে আগ্রহ সৃষ্টি হচ্ছে। বসতবাড়িতে অল্প শ্রমে ও স্বল্প ব্যয়ে অবসর সময়ে কবুতর পোষা যায়। কবুতর পুষে একদিকে পরিবারের আমিষ জাতীয় খাদ্যের চাহিদা মেটানো যায়, অপরদিকে বাড়তি আয়েরও সুযোগ হয়। বাচ্চা কবুতরের মাংস সুস্বাদু ও বলকারক হওয়ায় বাজারে এর যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে।

জীবন চক্র : পুরুষ ও স্ত্রী কবুতর জোড়া বেঁধে একসঙ্গে বাস করে। এদের জীবনকাল ১২ বছর। স্ত্রী-পুরুষ উভয় মিলে খড়কুটা সংগ্রহ করে ছোট জায়গায় বাসা তৈরি করে। ডিম পাড়ার স্থান ৫ থেকে ৬ মাস বয়সে স্ত্রী কবুতর ডিম পাড়া শুরু করে। এরা ২৮ দিন অন্তর ৪৮ ঘণ্টার ব্যবধানে ২ (দুই)টি ডিম দেয় এবং পাঁচ বছর বয়স পর্যন্ত দেয়া ডিমে বাচ্চা উত্পাদান ক্ষমতা সক্রিয় থাকে। স্ত্রী-পুরুষ উভয়েই পালা করে ডিমে তা দেয়। ডিম থেকে বাচ্ছা ফুটতে ১৭-১৮ দিন সময় লাগে। ডিমে তা দেয়ার ১৫ থেকে ১৬ দিনের মধ্যে স্ত্রী ও পুরুষ উভয় কবুতরের খাদ্য থলিতে দুধ জাতীয় বস্তু তৈরি হয় যা খেয়ে বাচ্চারা ৪ দিন পর্যন্ত বেঁচে থাকে। স্ত্রী ও পুরুষ কবুতর উভয়েই ১০ দিন পর্যন্ত এদের বাচ্চাকে ঠোঁট দিয়ে খাওয়ায়, এরপর বাচ্চারা দানাদার খাদ্য খেতে আরম্ভ করে।



কবুতরের জাত : পৃথিবীতে প্রায় দুশ’ থেকে তিনশ’ জাতের কবুতর আছে। মাংস উত্পাদনের জন্য সিলভারকিং, হামকাচ্চা, ডাউকা, কাউরা, গোলা, গোলী, পক্কা, লক্ষা ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। চিত্তবিনোদনের জন্য ময়ুরপঙ্খী, সিরাজী, লাহোরী, ফ্যানটেইল, জেকোডিন, মুক, গিরিবাজ, টেম্পলারলোটন—এসব জাতের কবুতর রয়েছে। এছাড়াও আমাদের দেশে উল্লেযোগ্য কবুতরের একটি জাত হচ্ছে ‘জালালী কবুতর’। এ নামটি হজরত শাহ্জালাল (রহ.) এর পুণ্য স্মৃতির সঙ্গে জড়িত।


পালনের সুবিধা : কবুতর পালন আনন্দদায়ক। কবুতরের গোশত সুস্বাদু ও পুষ্টিকর। প্রতিমাসে গড়ে ২টি বাচ্চা পাওয়া যায় এবং ৩-৪ সপ্তাহের মধ্যেই বাচ্চা খাওয়ার উপযোগী হয়। তাদের রোগবালাই কম। খাবার করচ কম এবং থাকার ঘর তৈরি করতে খরচ কম লাগে। স্বল্প পুঁজি ও শ্রমে সহজেই লাভবান হওয়া যায়।


কবুতরের বাসস্থান : কবুতরের থাকার ঘরটি উঁচু করে এমনভাবে তৈরি করতে হবে, যাতে ক্ষতিকর প্রাণী ও পাখিদের নাগালের বাইরে থাকে। ঘরে প্রচুর আলো-বাতাস প্রবেশের ব্যবস্থা রাখতে হবে। বৃষ্টির পানি যাতে ঢুকতে না পারে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। হালকা কাঠ, পাতলা টিন, বাঁশ বা প্যাকিং কাঠ দিয়ে কবুতরের ঘর বানানো যায়। প্রতিজোড়া কবুতরের জন্য ৩০ সেমি. চওড়ার এবং উচ্চতায় ৩০ সেমি. মাপের খোঁপ বানাতে হবে। কবুতরের ঘর পাশাপাশি বা কয়েকতলা বিশিষ্ট করা যেতে পারে। প্রতিটি খোপের জন্য একটি করে দরজা থাকবে। অধিক কবুতর পুষলে প্রয়োজনের তুলনায় কয়েকটি খোপ বেশি রাখতে হবে। প্রতিমাসে ১-২ বার করে ঘরে কবুতরের বিষ্টা পরিষ্কার করতে হবে এবং যাতে কবুতরের ঘর পরিষ্কার ও শুকনো থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। খাবার ও পানির পাত্র কবুতরের ঘরের কাছেই রাখতে হবে। এছাড়াও কবুতরের গোসলের জন্য পানি ও ধূলি এবং বাসা বানানোর জন্য খড়ের ব্যবস্থা রাখতে হবে।


খাদ্য : কবুতর সাধারণত গম, মটর, খেসারি, সরিষা, ভুট্টা, কলাই, ধান, চাল, কাউন, জোয়ার—এসব শস্যদানা খেয়ে থাকে। এরা মুক্ত আকাশে বিচরণ করে এবং পছন্দমত স্থান থেকে প্রয়োজনীয় খাদ্য সংগ্রহ করে থাকে। এছাড়া স্বাস্থ্য রক্ষা, দৈহিক বৃদ্ধি ও বংশবৃদ্ধির জন্য এদের খাবারের শতকরা ১৫ শতাংশ থেকে ১৬ শতাংশ আমিষ থাকা প্রয়োজন। তবে মুরগির জন্য নির্ধারিত তৈরি সুষম খাবার খাওয়ালে ভালো ফল পাওয়া যায়। প্রতিটি কবুতর দৈনিক গড়ে ৩৫ থেকে ৬০ গ্রাম দানাদার খাদ্য খেয়ে থাকে। কবুতর ছানার দ্রুত বৃদ্ধি, হাড়শক্ত ও পুষ্টি এবং বয়স্ক কবুতরে সুস্বাস্থ্য এবং ডিমের খোসা শক্ত হওয়ার জন্য ঝিনুকের চূর্ণ, চুনাপাথর, শক্ত কাঠকয়লার চূর্ণ, হাড়ের গুঁড়ো, লবণ এসব মিশিয়ে ‘গ্রিট মিকচার’ তৈরি করে খাওয়ানো প্রয়োজন। এছাড়াও প্রতিদিন কিছু কিছু কাঁচা শাক-সবজি কবুতরকে খেতে দেয়া ভালো।


খরচ : ১০ জোড়া কবুতরের জন্য ১টি ঘর বানাতে (খাবারের পাত্র, পানির পাত্রসহ) আনুমানিক ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা খরচ হতে পারে। প্রাপ্তবয়স্ক ১০ জোড়া কবুতরের ক্রয়মূল্য প্রায় ১০০০ টাকা এবং ১০ জোড়া থেকে মাসে প্রায় ৮ থেকে ৯ জোড়া বাচ্চা পাওয়া যাবে। এগুলো বিক্রি করে মাসে গড়ে ৬০০ টাকা আয় করা যাবে।






কবুতর পালনের বিভিন্ন সুবিধা সমুহ






স্বপ্ন কে বাস্তবতায় আনতে আপনার ইচ্ছা শক্তিই যথেষ্ট



কবুতর পালন করলে অসুবিধার চেয়ে সুবিধার পরিমাণ বেশি। পরবর্তীতে কবুতর পালনের বিভিন্ন সুবিধাসমূহ উল্লেখ করা হলো। 


সাধারনত একটি ভাল জতের কবুতর বছরে ১২ জোড়া ডিম প্রদানে সক্ষম হয়ে থাকে। এই ডিম গুলোর প্রায় প্রতিটি থেকেই বাচ্চা পাওয়া যায়। এই বাচ্চা পরবর্তী ৪ সপ্তাহের মধ্যেই খাওয়া বা বিক্রির উপযোগী হয়। 

গৃহপালিত অন্যান্য পাখির মধ্যে কবুতরকে পোষ মানানো বা লালন করা যায়।

খুবই অল্প জায়গায় কবুতর লালন পালন করা যায়। এমনকি ঝোলানো ঝুড়িতেও কবুতর পালন করা সম্ভব। লালন পালনে কম জায়গা লাগে বলে কবুতর পোষায় খরচের পরিমাণ একেবারেই কম। 


বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কবুতর নিজের খাবার নিজেই খুঁজে নিয়ে থাকে। এই কারণে কবুতরের খাবারের জন্য বাড়তি যত্ন বা খরচ খুব একটা হয় না বললেই চলে। 

কবুতরের থাকার জায়গার জন্য বাড়তি যত্নের প্রয়োজন হয় না। বাড়ির আঙিনা, বা ছাদের ওপর কাঠের ঘর তৈরি করে অনায়াসেই কবুতর পালন করা যায়। প্রমাণ সাইজের ঝুড়িতে করে ও কবুতর পালন করা যায়। 

একটি পূণাঙ্গ বয়সের কবুতর ডিম দেবার উপযোগী হতে ৫ থেকে ৬ মাস মসয় লাগে। এই অল্প সময় অতিক্রান্ত হবার পর থেকেই কবুতর বছরে প্রায় ১২ জোড়া ডিম প্রদানে সক্ষম। ২৬ থেকে ২৮ দিন বয়সেই কবুতরের বাচ্চা খাবার উপযোগী হয়ে থাকে বা এই বাচ্চাকে বাজারজাত করা যায়। সাধারণত কবুতরের বাচ্চা রুগীর পথ্য হিসেবেও অনেকে বেছে নেন। 


কবুতরের ডিম থেকে মাত্র ১৮ দিনেই বাচ্চা সাধারণ নিয়মে ফুটে থাকে। এই বাচ্চা আবার পরবর্তী ৫ থেকে ৬ মাস পরে নিজেরাই ডিম প্রদান শুরু করে।ফলে কবুতর বংশ পরম্পরায় প্রাকৃতিক নিয়মে নিজেরাই বাড়াতে থাকে নিজেদের সংখ্যা। 

কবুতরের মাংস প্রচুর চাহিদা রয়েছে।কারণ, কবুতরের মাংস খুবই সুস্বাদু ও বলকারক। তাছাড়া, বাজারের অন্যান্য মাংসের যোগান থেকে কবুতর কিছুটা সস্তাতে ও পাওয়া যায়। 


একটি খুব ভালো প্রজাতির কবুতর লালন করলে পরবর্তী ১ বছরের মধ্যে সেই জোড়া থেকে কয়েক জোড়া কবুতর পাওয়া খুব বেশি আর্শ্চযজনক বিষয় নয়। এই কবুতরকে একটি লাভজনক ব্যবসা হিসেবে ধরা যেতে পারে। কারণ, কবুতর লালন-পালনের খরচ খুব একটা নেই। এমনকি কবুতরের রোগ ব্যাধি কম হয়। কবুতরের থাকার জায়গা নির্বাচনে ও অতিরিক্ত যত্নের প্রয়োজন হয় না। এই কারণে ব্যবসায়িক ভিত্তিতে কবুতর পালন অবশ্যই লাভজনক।

ধারাবাহিক ভাবে কবুতর তার বংশবৃদ্ধি করে বলে অনেকেই আজকাল কবুতর পালনের দিকে ঝুঁকে পড়েছেন।মুরগির মাংসের বিকল্প হিসেবে কিংবা অতিথি পাখির বিকল্প হিসেবে অনেকেই কবুতরের মাংস বেছে নিয়ে থাকেন। 

লেখক: আবদুল্লাহ আল মামুন, উপ-পরিচালক, বংলাদেশ কৃষি গবেষনা ইনস্টিটিউট।

কবুতর পালন হতে পারে আপনার মুক্ত পেশা




আপনার শখ-ই হতে পারে আপনার মুক্ত পেশা 



আমাদের দেশে বিভিন্ন গৃহপালিত পাখির মধ্যে কবুতর সর্বাধিক জনপ্রিয় কারণ, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কবুতর পালন করা হয়- এর বাহ্যিক সৌন্দর্য্যগত দিকগুলোর কারণে প্রাচীনকালে কবুতর পালন করা হতো চিঠি আদান প্রদানের কাজে শোনা যায় প্রাচীনকালে রাজা বাদশাহ তাঁদের বিভিন্ন ধরনের বার্তা প্রেবণের জন্য বেছে নিতেন কবুতরকে এছাড়া, সারা পৃথিবী জুড়ে কবুতরকে ধরা হয় শান্তির দূত হিসেবে এই কারণে,বিভিন্ন গঠনমূলক কাজে ধর্মাধর্ম নির্বিশেষে কবুতরকে খাঁচামুক্ত করে উদ্বোধন করা হয় 


সবচেয়ে বড় কথা, কবুতর পালন করার জন্য অতিরিক্ত বা বাহুল্য কোন খরচ হয় না কবুতরকে সহজেই পোষ মানানো যায় বাড়ির যেকোন কোণ বা আঙিনা অথবা বাড়ির ছাদ কিংবা কার্নিশের মত ছোট বা অল্প জায়গাতে কবুতর পালন করা যায় এমনকি ছাদের সাথে ঝুড়ি ঝুলিয়ে কবুতর পালন করা যায়এই কারণে, শহরে কী গ্রামে অনেক বাড়িতেই কবুতর পালন করা যায়


কবুতরের মাংস অত্যন্ত সুস্বাদু এবং বলকারক বিশেষজ্ঞরা বলেন, কবুতরের মাংসে সাধারণ অন্যান্য পাখির মাংসের চাইতে প্রোটিনের পরিমান বেশি ফলে আমিষের পাশাপাশি প্রটিনের বাড়তি চাহিদা পূবণের জন্য কবুতরের মাংস খাওয়া হয়ে থাকে বানিজ্যিকভাবে কবুতর পালন করে অনেকেই অল্প সময়ে এটাকে লাভ জনক ব্যবসা হিসেবে দাঁড়া করাতে পেরেছেন কবুতর সাধারণভাবে জোড়ায় বেঁধে বাস করে প্রতি জোড়ায় একটি পুরুষ এবং একটি স্ত্রী কবুতর থাকে এরা ১২ থেকে ১৫ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকে যতদিন বেঁচে থাকে_ ততদিন এরা ডিমের মাধ্যমে বাচ্চা প্রজনন করে থাকেডিম পাড়ার পর স্ত্রী পুরুষ উভয় কবুতরই পর্যায়ক্রমে উক্ত ডিমে তা দিয়ে থাকে কবুতরের কোন জোড়া হঠাৎ ভেঙে গেলে সেই জোড়া তৈরি করতে কিছুটা বেগ পেতে হয়নতুন জোড়া তৈরি করার জন্য স্ত্রী পুরুষ কবুতরকে একঘরে কিছুদিন রাখতে হয়
Copyright © 2014 All about Pigeon